Followers

Sunday 10 June 2012

ধন সম্পদের অপকারিতা ও ধনীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ব্যাপারে মহানবী (সা.) কঠোর হুশিয়ারী !!!

নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছিলেন যে, তোমাদের পর এমন সব লোকেরা দুনিয়াতে আসবে যারা সব রকমের উৎকৃষ্ট খাদ্য গ্রহণ করবে, রকমারী উৎকৃষ্ট ঘোড়ায় সওয়ার হবে , বিভিন্ন রঙের সুন্দরী নারীদেরকে বিবাহ করবে, বিভিন্ন রং-রূপের উৎকৃষ্টতম লেবাস পোশাক পরিধান করবে । কিন্তু অল্পতে তাদের পেট ভরবেনা, অনেক পেয়েও তাদের সাধ মিটবেনা; দুনিয়ার জন্য তারা হবে পাগলপারা, দিনরাত দুনিয়ার পিছনেই পড়ে থাকবে । আল্লাহকে ছেড়ে দুনিয়াকেই তারা মাবুদ বানাবে , দুনিয়াকেই তাদের পালনকর্তা জ্ঞান করবে । দুনিয়াই হবে তাদের প্রধান উদ্দেশ্য এবং তারা স্ব স্ব প্রবৃত্তির অনুসরণ করবে । অতএব, তোমাদের পরবর্তীদের মধ্যে যারা সেই যমানা পাবে, তাদের প্রতি মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ (সা.) এর কঠোর নির্দেশ, তারা যেন ওই সব লোকদের সালাম না দেয়, তাদের রোগীদের পরিচর্যায় না যায় , তাদের জানাযায় শরীক হবে না, তাদের বড়দের প্রতি সমীহ প্রদর্শন করবেনা । যে ব্যাক্তি তা করবে সে ইসলামকে ধ্বংসের কাজে সাহায্য করবে ।

তিনি আরো বলেছেন, দুনিয়াকে দুনিয়াদারদের জন্য ছেড়ে দাও । যে ব্যাক্তি তার প্রয়োজনের অধিক দুনিয়া হাসিল করে, নিজের অজান্তে সে নিজেরই মৃত্যু (অর্থাৎ সীমাহীন কষ্ট ) ডেকে আনে ।

হুযুর (সা.) বলেন,

" মানুষ তো 'আমার মাল, আমার মাল' বলে বেড়াচ্ছে । অথচ , তোমার মাল তো শুধু এতটুকু যা তুমি খেয়ে শেষ করেছ কিংবা পরিধান করে পুরাণ করে ফেলেছ , অথবা দান সদকা করে আখেরাতের জন্য জমা করেছ ।"

আল্লাহ পাক বলেন,

"হে ঈমানদার গণ, তোমাদের ধন-দৈালত ও সন্তান সন্ততিরা যেন তোমাদিগকে আল্লাহর স্মরণ হতে বিস্মৃত না করে দেয় । যারা তা করবে , তারাই ক্ষতিগ্রস্হ হবে । ' (মুনাফিকুনঃ ৯)

আল্লাহ সুবহানাতা'য়ালা আরো বলেন,

" তোমাদের সম্পদ ও আওলাদ হচ্ছে তোমাদের পরীক্ষা । এবং আল্লাহর কাছেই রয়েছে বৃহৎ পুরস্কার । " (তাগাবুনঃ ১৫)

মহানবী (সা.) বলেছেন,

" সম্পদ ও সম্মানের মোহ হৃদয়ে কপটতা উৎপন্ন করে, যেভাবে পানি শস্য উৎপাদন করে ।"

তিনি আরো বলেছেন,

" দুটি হিংস্র বাঘকে কোন বকরীর পালে ছেড়ে দেওয়া হলে তা ঐ বকরীর পালের জন্য অত বেশী ক্ষতিকর নয় যতটা ক্ষতিকর সম্পদ ও সম্মানের মোহ যেকোন মুসলমানের দ্বীনের জন্য "

তিনি আরো বলেছেন,

" অধিক সম্পদশালী ব্যাক্তিদের ধ্বংস অবধারিত ; তবে তারা (ব্যতীত) যারা সেই সম্পদ আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে বিলিয়ে দেয় । কিন্ত তাদের সংখ্যা খুবই নগন্য । একদা প্রশ্ন করা হয়ে ছিলো যে, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আপনার উম্ততের মধ্যে সর্বাধিক নিকৃষ্ট কারা ? তিনি বললেন, ধনী ব্যক্তিরা । (তবে তারা ব্যতীত যারা সৎ পথে আয় ও ব্যয় করে ও দান করে )

কথিত আছে, সর্বপ্রথম যখন দীনার ও দিরহাম বানানো হয় অর্থাৎ মুদ্রা তখন ইবলিশ ঐ মুদ্রাকে সযত্নে তুলে নিয়ে কপালে লাগায় । অতঃপর চুম্বন করে বললো, যারা তোমাকে ভালবসবে তারাই আমার প্রকৃত গোলাম ।

সূত্রঃ মুক্কশাফাতুল ক্বুলুব - আত্নার আলো । ইমাম গাজ্জালী (রহ.) ।

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...