নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছিলেন যে, তোমাদের পর এমন সব লোকেরা দুনিয়াতে আসবে
যারা সব রকমের উৎকৃষ্ট খাদ্য গ্রহণ করবে, রকমারী উৎকৃষ্ট ঘোড়ায় সওয়ার হবে ,
বিভিন্ন রঙের সুন্দরী নারীদেরকে বিবাহ করবে, বিভিন্ন রং-রূপের উৎকৃষ্টতম
লেবাস পোশাক পরিধান করবে । কিন্তু অল্পতে তাদের পেট ভরবেনা, অনেক পেয়েও
তাদের সাধ মিটবেনা; দুনিয়ার জন্য তারা হবে পাগলপারা, দিনরাত দুনিয়ার পিছনেই
পড়ে থাকবে । আল্লাহকে ছেড়ে দুনিয়াকেই তারা মাবুদ বানাবে , দুনিয়াকেই তাদের
পালনকর্তা জ্ঞান করবে । দুনিয়াই হবে তাদের প্রধান উদ্দেশ্য এবং তারা স্ব
স্ব প্রবৃত্তির অনুসরণ করবে । অতএব, তোমাদের পরবর্তীদের মধ্যে যারা সেই
যমানা পাবে, তাদের প্রতি মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ (সা.) এর কঠোর নির্দেশ,
তারা যেন ওই সব লোকদের সালাম না দেয়, তাদের রোগীদের পরিচর্যায় না যায় ,
তাদের জানাযায় শরীক হবে না, তাদের বড়দের প্রতি সমীহ প্রদর্শন করবেনা । যে
ব্যাক্তি তা করবে সে ইসলামকে ধ্বংসের কাজে সাহায্য করবে ।
তিনি আরো বলেছেন, দুনিয়াকে দুনিয়াদারদের জন্য ছেড়ে দাও । যে ব্যাক্তি তার
প্রয়োজনের অধিক দুনিয়া হাসিল করে, নিজের অজান্তে সে নিজেরই মৃত্যু (অর্থাৎ
সীমাহীন কষ্ট ) ডেকে আনে ।
হুযুর (সা.) বলেন,
" মানুষ তো 'আমার মাল, আমার মাল' বলে বেড়াচ্ছে । অথচ , তোমার মাল তো শুধু
এতটুকু যা তুমি খেয়ে শেষ করেছ কিংবা পরিধান করে পুরাণ করে ফেলেছ , অথবা দান
সদকা করে আখেরাতের জন্য জমা করেছ ।"
আল্লাহ পাক বলেন,
"হে ঈমানদার গণ, তোমাদের ধন-দৈালত ও সন্তান সন্ততিরা যেন তোমাদিগকে আল্লাহর
স্মরণ হতে বিস্মৃত না করে দেয় । যারা তা করবে , তারাই ক্ষতিগ্রস্হ হবে । '
(মুনাফিকুনঃ ৯)
আল্লাহ সুবহানাতা'য়ালা আরো বলেন,
" তোমাদের সম্পদ ও আওলাদ হচ্ছে তোমাদের পরীক্ষা । এবং আল্লাহর কাছেই রয়েছে বৃহৎ পুরস্কার । " (তাগাবুনঃ ১৫)
মহানবী (সা.) বলেছেন,
" সম্পদ ও সম্মানের মোহ হৃদয়ে কপটতা উৎপন্ন করে, যেভাবে পানি শস্য উৎপাদন করে ।"
তিনি আরো বলেছেন,
" দুটি হিংস্র বাঘকে কোন বকরীর পালে ছেড়ে দেওয়া হলে তা ঐ বকরীর পালের জন্য
অত বেশী ক্ষতিকর নয় যতটা ক্ষতিকর সম্পদ ও সম্মানের মোহ যেকোন মুসলমানের
দ্বীনের জন্য "
তিনি আরো বলেছেন,
" অধিক সম্পদশালী ব্যাক্তিদের ধ্বংস অবধারিত ; তবে তারা (ব্যতীত) যারা সেই
সম্পদ আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে বিলিয়ে দেয় । কিন্ত তাদের সংখ্যা খুবই নগন্য
। একদা প্রশ্ন করা হয়ে ছিলো যে, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! আপনার উম্ততের মধ্যে
সর্বাধিক নিকৃষ্ট কারা ? তিনি বললেন, ধনী ব্যক্তিরা । (তবে তারা ব্যতীত
যারা সৎ পথে আয় ও ব্যয় করে ও দান করে )
কথিত আছে, সর্বপ্রথম যখন দীনার ও দিরহাম বানানো হয় অর্থাৎ মুদ্রা তখন ইবলিশ
ঐ মুদ্রাকে সযত্নে তুলে নিয়ে কপালে লাগায় । অতঃপর চুম্বন করে বললো, যারা
তোমাকে ভালবসবে তারাই আমার প্রকৃত গোলাম ।
সূত্রঃ মুক্কশাফাতুল ক্বুলুব - আত্নার আলো । ইমাম গাজ্জালী (রহ.) ।
No comments:
Post a Comment